স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গরু হত্যার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার একটি অভিযোগ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সদস্যরা কট্টর হিন্দুত্ববাদী শাসকদের অধীনে থাকা উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের জীবন আরো অতীষ্ট করতে চাচ্ছে।
জানা গেছে, গত মাসে মুসলিম ধর্মাবলম্বী চারজনের বিরুদ্ধে গোহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এনিয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। তারপর পুলিশ জানতে পারে, আসলে ওই মুসলিম ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল। কারণ তাদের একজনের সাথে এক হিন্দু সংগঠনের নেতার ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল। আর তার জেরেই তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপরই পুলিশ ওই মিথ্যা অভিযোগকারীদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। আরো সাতজনকে পুলিশ খুঁজছে। উত্তরপ্রদেশের আগ্রার ঘটনা। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে পুলিশের এই নিরপেক্ষতার ঘটনাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবে আলোচনা চলছে পুরোদমে।
আগ্রার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ আর কে সিং জানিয়েছেন, গত ৬ এপ্রিল আগ্রা পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছিল। তার মধ্যে ইমরান কুরেশি ওরফে ঠাকুর আর শানু ওরফে ইল্লি। তারা এভাবে নিরীহ লোকেদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। আরো সাতজনের কথা জানা গেছে, যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।
এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার চারজন সদস্যও এই চক্রান্তের শরিক বলে জানা গিয়েছে। তাদেরও খোঁজ করছে পুলিশ। মহাসভার জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জয় জাট এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। জানিয়েছে পুলিশ। এসিপি জানিয়েছেন, চারজনের বিরুদ্ধে ওদের কোনো ব্যক্তিগত রাগ ছিল। সেকারণেই তারা মিথ্যে অভিযোগ এনেছিল।
এদিকে সংবাদমাধ্যমের তরফে মহাসভার অভিযুক্ত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কেউই ফোন ধরেননি। কিন্তু ঘটনাটা ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ সূত্রে খবর, রাম নবমীর ঠিক আগে মহাসভার নেতা জিতেন্দ্র কুমার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান যে তিনি খবর পেয়েছেন যে রিজওয়ান, আর তার ছেলেরা নাকিমসহ কয়েকজন গৌতম নগরে একটি গরু কেটেছিল। এরপর তারা গরুর গোশত বিক্রির চেষ্টা করছিল।
কুমার পুলিশকে জানিয়েছিল, তিনি বন্ধু বিশাল ও মণীশকে নিয়ে এলাকায় গিয়েছিলেন। তাদের দেখে ওরা পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। ইউপি প্রিভেনশন অফ কাউ স্লটার অ্যাক্টে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশও গরুর গোশত পেয়েছিল।
পরে মহাসভার পক্ষ থেকে থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয় নাকিমের গ্রেফতারের দাবিতে। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানতে পারে যে ঘটনার সময় এফআইআরে নাম থাকা কেউ ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, চারজন মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস